Wednesday, January 1, 2025
spot_img
Homeঅন্যান্যবিশ্বকাপ নিয়ে অনলাইন জুয়া, বাড়াতে হবে নজরদারি

বিশ্বকাপ নিয়ে অনলাইন জুয়া, বাড়াতে হবে নজরদারি

দেশ তথ্য-প্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। শহরের সীমা ছাড়িয়ে তথ্য-প্রযুক্তির সেবা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ তার প্রভূত সুফলও পাচ্ছে। দেশে-বিদেশে নানা রকম যোগাযোগ হচ্ছে।

পাশাপাশি কিছু সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। বাড়ছে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ। অনলাইনে জুয়া খেলাসহ অন্তত ১৩ ধরনের সাইবার অপরাধ ঘটছে।

নগদ টাকায় বছরজুড়ে জুয়ার আসর বসে আইপিএল, বিপিএল, বিশ্বকাপ বা জাতীয় দলের ম্যাচ নিয়ে।

সারা দেশে এমন দোকান, গ্যারেজ, ক্লাব বা হোটেলের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নগদ জুয়ার পাশাপাশি বাজি ধরা হয় নানা ওয়েবসাইটেও। সেখানে জুয়া খেলে সাধারণ রিকশাচালক, ড্রাইভার, হকার, ছাত্র, ব্যবসায়ীরা। এসব ওয়েবসাইটের জুয়ায় টাকা হারানো মানুষের সংখ্যাই বেশি।

কিন্তু তার পরও বন্ধ করা যাচ্ছে না অনলাইন জুয়া। ২০২১ সালে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, আগের তিন বছরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বাজি ধরার ১৭৬টি ওয়েবসাইট বন্ধ করেছিল। তবে কিছুদিন পর ওয়েবসাইটগুলো ডোমেইনে নাম বদলে ফিরে এসেছে। মূল সাইটের কাছাকাছি নাম দিয়ে মিরর বা বিকল্প সাইট খুলছে। কিছু অনুমোদনহীন গেটওয়ের মাধ্যমে বন্ধ হওয়া সাইট বা নতুন সাইট ব্রাউজ করেও খেলা হয় জুয়া।

সাইটগুলোর ডোমেইন দেশের বাইরে। এই ওয়েবসাইটগুলোয় একাধিক বিকাশ, রকেট ও নগদ নম্বর দেওয়া আছে। সিআইডি বলছে, জুয়ার ওয়েবসাইটে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য কিছু ফোন নম্বর দেওয়া থাকে। সেগুলো প্রতি ঘণ্টায় বদলে যায়। কারণ একটি নম্বরে প্রতিদিন লেনদেনের নির্ধারিত সীমা রয়েছে। অস্বাভাবিক লেনদেন হলে সন্দেহে পড়তে হতে পারে। এসব কারণে তারা অর্ধশত এমএফএস (মোবাইল ব্যাংকিং সেবা) নম্বর ব্যবহার করে টাকা নেয়। পরে সেই টাকা পাচার করে তারা। অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, অনলাইন জুয়াড়িদের মাধ্যমে দেশ থেকে এক বছর ৯ মাসে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

ভালো মানের একটি মোবাইল ফোন হলেই জুয়া খেলা সহজ এখন। এ জন্য আছে নানা ওয়েবসাইট। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার মানুষ বেট উইনার সাইটে জুয়া খেলে। তাদের বেশির ভাগই সাধারণ আয়ের মানুষ। ‘ভাগ্যবদলের’ আশায় গ্রামাঞ্চলের স্বল্প শিক্ষিত মানুষও এতে জড়িয়ে পড়ছে। সিআইডির পর্যবেক্ষণ বলছে, সাধারণত একজন জুয়াড়ি দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার বাজি ধরে। অনলাইন জুয়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সূত্র বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে এক হাজারের বেশি অনলাইন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০১৯ ও ২০২২ সালে অনলাইনে জুয়া খেলার ৫০৭টি সাইট বন্ধ করে দেয়। চলতি বছরের এ পর্যন্ত সাড়ে তিন শর বেশি সাইট বন্ধ করা হয়। তার পরও থেমে নেই অনলাইন জুয়া। জুয়া বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নানা তৎপরতা বাড়ানোর পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোরও উদ্যোগ নিতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

Recent Comments