Sunday, December 29, 2024
spot_img
Homeরাজনীতিমহাসমাবেশে জামায়াতের ঘোষণা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন নয়

মহাসমাবেশে জামায়াতের ঘোষণা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন নয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মহাসমাবেশে এই ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, জীবন দিয়ে হলেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর আরামবাগে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশের হুঙ্কার ও বাধা অতিক্রম করে জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশে লাখো মানুষ উপস্থিত হয়। পুলিশ ঘোষণা করেছিল জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু ভোরে জনস্রোত দেখে পুলিশ মতিঝিলের পরিবর্তে আরামবাগে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় দলটিকে। অনুমতি পাওয়ার পরই জামায়াতে ইসলামী তাৎক্ষণিকভাবে মাইক লাগানো এবং ট্রাক এনে মঞ্চ তৈরির কাজ সারে। বেলা বাড়লে এক পর্যায়ে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে এক জনস্রোত তৈরি হয়।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগ আয়োজিত এই মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, ২৮শে অক্টোবর সেই ঐতিহাসিক দিন, যেদিন লগি বৈঠা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হায়নার মতো পিটিয়ে হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ। সাপের মতো মেরেছিল। আমরা সেই ২৮শে অক্টোবরের প্রতিশোধ নিতে চাই। তবে হত্যার বদলে হত্যা নয়। আমরা কোরআন ও সুন্নাহর আইন চালু করে প্রতিশোধ নেব ইনশাআল্লাহ। আমাদের কোনো শহীদ ভাইয়ের একটি ফোটা রক্ত বৃথা যেতে দেব না।

তিনি বলেন, এই মহাসমাবেশে আসার পথে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের আমির ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার, রফিকুল ইসলাম খান, মতিউর রহমান আকন্দসহ দলীয় ও রাজবন্দী সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী অবশ্যই নির্বাচনে যাবে।

তবে তা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নয়। জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক দল। আমরা অনেক লড়াই-সংগ্রাম করেছি। আমরা আওয়ামী লীগ বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছি স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে। আমরা কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংগ্রাম করেছি। অথচ আজ আওয়ামী লীগের সুর ভিন্ন। আওয়ামী লীগ না কি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি? তাদের সঙ্গে থাকলে স্বাধীনতার পক্ষের, বিপক্ষে গেলে যুদ্ধাপরাধী। এটা মুনাফেকি।

তাহের বলেন, আমরা অনেক নির্বাচনেই অংশ নিয়েছি। আমরা নির্বাচন বয়কট করেছি ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে। আমরা গণতান্ত্রিক। কিন্তু আমরা কোনো ভোট, ব্যালট ডাকাতির ভোটের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। আমরা নির্বাচন করব। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে নয়। দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন বৈধ হয় না সেটা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রমাণ হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশে তাহের বলেন, শতকরা ৫০ শতাংশ ভোট না হলে সেটা নির্বাচন বলা যাবে না। আপনি না কি ভালো মানুষ শুনেছি। আপনি প্রয়োজনে পদত্যাগ করুন। কিন্তু নুরুল হুদা হবেন না।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির শামসুল ইসলাম বলেন, ভোটবিহীন সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে। আজকে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণের অধিকার আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ক্ষমতা না দেয়া পর্যন্ত, ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আ.ন.ম শামসুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ।

সূত্রঃ আমার দেশ

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

Recent Comments