বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মতো বাংলাদেশ পুলিশ এবং এর কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নর্থইস্ট নিউজের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর উদ্দেশ্যে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ চিহ্নিত করাই মূলত এ বৈঠকের উদ্দেশ্য। শত শত মানুষকে ‘জোরপূর্বক গুম’ যার অন্যতম উদাহরণ।
পদক্ষেপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র বার্তা সংস্থা নর্থইস্ট নিউজকে জানিয়েছে, নভেম্বরের শুরুতে হতে যাওয়া এই বৈঠকের প্রধান উদ্দেশ্যে হচ্ছে ‘নির্ভরযোগ্য প্রমাণাদি’ প্রস্তুত করা। যা আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মামলার অংশ হতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক সাত শীর্ষ কর্মকর্তাসহ র্যাবের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মতো ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
একই সময়ে (২০২১ সালে) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তৎকালীন র্যাব প্রধান বেনজীর আহমেদ ও সাবেক কমান্ডিং অফিসার (ইউনিট-৭) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনে বাংলাদেশ পুলিশের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ভূমিকার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে মূলত। মার্কিন কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত হবে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ ও অসংখ্য ভিডিও ফুটেজের ওপর ভিত্তি করে। উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ডিএমপির একজন সদস্যের মৃত্যু।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষস্থানীয় একটি সূত্র নর্থইস্ট নিউজকে জানিয়েছে, ‘কয়েকদিন আগে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ‘শঙ্কা’ প্রকাশ করেছিলেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র নর্থইস্ট নিউজকে জানিয়েছে, হাসের সঙ্গে বৈঠকের পরপরই কিছু সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার কাছে তার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ‘শঙ্কা’ (পুলিশের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার) প্রকাশ করেছিলেন।
২৮ অক্টোবর ঢাকার রাজপথে সহিংসতার একদিন পর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পল্টনের বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড করার উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনের আশপাশে পুলিশের ‘সমর্থন’ নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত করে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াত সমর্থকরা শাপলা চত্বর ত্যাগ করে। এসময় কিছু ‘দুষ্কৃতিকারী’ প্রধান বিচারপতির বাসভবন লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এরপরই বিএনপি সমর্থকরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।