Thursday, April 10, 2025
spot_img
Homeকৃষিবগুড়ায় মিঠুর ভাগ্য বদল করলো ড্রাগন ফল

বগুড়ায় মিঠুর ভাগ্য বদল করলো ড্রাগন ফল

জানা যায়, মিঠু সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী ইউনিয়নের কুপতলা গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েছেন। অবশেষে চাকরি না পেলে তিনি কৃষিকাজ শুরু করেছেন। গত কয়েক বছর আগে তিনি তার বাবার ১২ বিঘা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রথমে মাল্টার বাগান করেন। এরপর ড্রাগন চাষ করে ভাগ্য বদলে গেছে চাষি মিজানুর রহমান মিঠুর। পড়াশোনা করে চাকরি না পেয়ে তিনি কৃষিকাজ শুরু করেন। মিঠু প্রায় ১২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করে ২ বছরে ৩০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। তাই বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকায় তিনি সফল চাষি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

বাজার মূল্যের সাথে টিকতে না পেরে তিনি মাল্টার বাগান ভেঙে সেখানে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে তার বাগানে ড্রাগন চাষ ভালো সাড়া ফেলেছে। প্রতিবছর মে মাস থেকে শুরু করে নভেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি জমি থেকে ড্রাগন ফল উত্তোলন করেন। গত ২ বছর ধরে তিনি ড্রাগন বিক্রি করে আসছেন।

বাজারে এ ফলের চাহিদা থাকায় ভাল দামও পাচ্ছেন। ২ বছরে তিনি প্রায় ৩০ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় তার ড্রাগনের চাহিদা রয়েছে। একবার জমিতে ড্রাগনের চারা লাগিয়ে তিনি ১২ বছর পর্যন্ত বিক্রি করার স্বপ্ন দেখছেন। তবে প্রতিমাসে তার খরচের পরিমাণও অনেক বেশি। ওষুধ, নিড়ানি, শ্রমিক, পাহারাদার এবং সেচসহ প্রায় প্রতিমাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। খরচ বাদ দিয়েও ২ বছরে তিনি বেশ লাভবান হয়েছেন। এদিকে ড্রাগনের বাগান করে যেমন সফল হয়েছেন, অন্যদিকে তার বাগানে বেশ কিছু বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছেন। ড্রাগন বাগানে কাজ করা শ্রমিক মজিবর রহমান মজিদ জানান, এ বাগানে কাজ করে তিনি প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা বেতন পান। যা দিয়ে তার সংসার সচ্ছলভাবেই চলছে। ঢাকায় চাকরি না করে বাড়িতে থেকে এই বাগানে কাজ করতে পেরে খুবই খুশি তিনি। ড্রাগন চাষি মিজানুর রহমান মিঠু জানান, পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য অনেক জায়গায় ঘুরেছি। শেষে কোনো চাকরি না পেয়ে হতাশায় পড়েছিলাম। পরে বাবার দেওয়া জমিতে কৃষিকাজ শুরু করি। প্রথমে মাল্টা চাষে সফলতা না পেয়ে বর্তমানে ড্রাগন চাষ করছি। আশা করা যাচ্ছে প্রতিবছর ড্রাগন বাগান থেকে আয়ের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বাড়তে থাকবে। তিনি বলেন, ড্রাগন বাজারে এখন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। হাটবাজারে এ ফলের চাহিদাও রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারা বাগানে ড্রাগন ফল নিতে আসেন।

সারিয়াকান্দি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পুরো উপজেলাতেই এখন ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন অনেক কৃষক। উপজেলায় নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। পুষ্টিমাণ হিসেবে এই ফল মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রায় সব ধরনের ভিটামিন এই ফলে পাওয়া যায়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি কার্যকর। ছোট থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের জন্য ড্রাগন ফল উপকারী। কৃষকরা ড্রাগন ফসল চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রতি মৌসুমে একটি গাছ থেকে ২ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত ড্রাগন ফলন পাওয়া সম্ভব।সারিয়াকান্দি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, বর্তমানে ড্রাগন চাষে অনকে কৃষকই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি। কৃষি অফিস থেকে নানা ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের ড্রাগন চাষে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।তিনি বলেন, অনেক শিক্ষিত যুবকরা এখন কৃষিকাজ এবং খামার করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এতে করে বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন/এমআই

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

Recent Comments