আগামী বছর হজ্জ্ব এ যেতে সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঘোষিত সাধারণ প্যাকেজ অনুযায়ী, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজ্জ্ব যাত্রীর গত বছরের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম খরচ হবে। একই সঙ্গে থাকছে বিশেষ প্যাকেজ।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ‘হজ্জ্ব প্যাকেজ-২০২৪’ ঘোষণা করেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
তিনি জানান, সরকারিভাবে হজ্জ্ব এর সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বিশেষ হজ্জ্ব প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা।
চলতি বছর সরকারিভাবে একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ্জ্ব পালনে খরচ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ্জ্ব পালনে খরচ ধরা হয়েছিল সর্বনিম্ন ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯০ টাকা।
ইতোমধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে যে চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ্জ্ব করতে পারবেন।
চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ্জ্ব করতে পারবেন। এরই মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে যে সরকারিভাবে ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ্জ্ব পালন করতে পারবেন। হজ্জ্ব নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে পর্যালোচনা করে এ প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ, ২০২৪ সালের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ হজ্জ্ব প্যাকেজের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে তিনি বলেন, অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে মক্কার হোটেলে ২ ও ৩ সিটের রুম গ্রহণ করা যাবে।
মক্কায় হারাম শরিফের চত্বর থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ মিটারের মধ্যে উন্নতমানের হোটেল, মদিনায় মারকাজিয়া এলাকায় আবাসন ব্যবস্থা, এক রুমে সর্বোচ্চ ৪ সিট থাকবে, মিনায় ‘এ’ ক্যাটাগরির তাঁবুতে আবাসন ও বুফে খাবার ব্যবস্থা এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনায় যাতায়াতে প্রত্যেক হজ্জ্ব যাত্রীর জন্য বাসে সিট নিশ্চিত করা হবে।
বিশেষ প্যাকেজে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের সাধারণ প্যাকেজের মূল্য এবং সুযোগ-সুবিধা সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে জানিয়ে ফরিদুল হক খান বলেন, সাধারণ প্যাকেজে প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ সিট থাকবে। প্যাকেজ আপগ্রেডেশনের সুবিধায় অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে মক্কার হোটেলে ২ ও ৩ সিটের রুম গ্রহণ করা যাবে। সাধারণ প্যাকেজের ব্যয় গত বছরের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম। বিমান ভাড়া ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে হজ্জ্ব যাত্রীর নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামী বছরের ১ মার্চ থেকে হজ্জ্ব ভিসা ইস্যু শুরু হবে। ৯ মে থেকে হজ্জ্ব ফ্লাইট শুরু হবে।
‘সরকারি মাধ্যমের সাধারণ প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হজ্জ্ব এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য এই প্যাকেজ ঘোষণা করবে এবং যাত্রীদের জন্য অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে।’
উন্নতমানের বাড়ি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে এজেন্সি একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
‘দুটি হজ্জ্ব প্যাকেজ করার কারণে এবার যারা টাকা কম দিয়ে যাওয়া ইচ্ছা তারা সেই সুযোগটা (সাধারণ প্যাকেজ) পাচ্ছেন। যারা আরাম-আয়েশে থাকতে চান তারা একটু বেশি টাকা (বিশেষ প্যাকেজ) দিয়ে যাবে।’
ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, সৌদি সরকার আমাদের চাপ দিয়েছে যে ডিসেম্বরের মধ্যে হজযাত্রীর সংখ্যা জানাতে হবে। এ নিয়মটা থাকবে কি না জানি না, আমরা সে প্রস্তুতিতেই এগোচ্ছি।
তিনি বলেন, একজন মানুষ হজ্জ্বে যাবে তার প্রস্তুতির দরকার আছে। সরকারের কাছে টাকা জমা দেবে। তাই আমরা তাদের সে সময়টা দিচ্ছি। আশা করি আমরা সময় মতো কাজটা করতে পারবো। আমরা তাড়াহুড়ো করতে চাই না। এবার আমরা কোটাও আগে পেয়ে গেছি।
হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সাংবাদিকদের বলেন, বিমান ভাড়া নিয়ে আজকেও হাবের আপত্তি ছিল। বরাবরই বলেছি, ভাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নয়, একটি স্বতন্ত্র কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। যারা এভিয়েশন বোঝে এবং কত টাকা ভাড়া হওয়া উচিত সেটি তারা নির্ধারণ করবে। বিমান ভাড়া ডেডিকেটেড হজ্জ্ব ফ্লাইটের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো এয়ারলাইন্স যদি সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে হজযাত্রীদের বহন করে সেক্ষেত্রে ভাড়া কম হয়। সে ভাড়া যাতে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, আমরা সে দাবি উত্থাপন করেছিলাম।
আরএমএম/এমকেআর/জিকেএস