প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মালপত্র থাকা সত্ত্বেও বাজারে না এনে অনেকে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা করে, এদের খুঁজে বের করতে হবে। মাছ, মাংস, ডিম, তরিতরকারি ও চালসহ প্রতিটি জিনিসের উৎপাদন বেড়েছে। তাহলে কীসের অভাব হবে? রেখে দেবে কিন্তু বাজারে আনবে না। বাজারে না এনে দাম বাড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, এটাই তারা করে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎপাদন এতটুকুও কমেনি… সেটি আলু, চাল, পেঁয়াজ বলুন আমরা সবকিছুর উৎপাদন বাড়িয়েছি।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, মানিলন্ডারিংয়ের মামলাতেও সাজাপ্রাপ্ত। তার মানিলন্ডারিংয়ের তথ্য বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এসে তারেকের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে যায়। সেই সাক্ষীতে তার সাজা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি না করার প্রতিশ্রুতিতে তারেক জিয়া দেশ ছেড়ে চলে যায়। শোনা যায় সেখানে জুয়া খেলে কোটি কোটি পাউন্ড ইনকাম করে। জুয়া খেলাই না কি তার সোর্স অব ইনকাম। আমরা তো ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। সে এখন বিদেশে বসেই নির্দেশ দেয় যে জ্বালাও, পোড়া ও মানুষ খুন করো, এগুলো তাদেরই কথা৷ একজন সাজাপ্রাপ্ত তো আসামিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছে। কেন… বিএনপিতে আর কোনো নেতা ছিল না? যে কারণে তারা নির্বাচন চায় না। নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি করতে চায়। কোনো কোনো মহল থেকে তারা যথেষ্ট উসকানিও পায়।
তিনি আরও বলেন, বাসে আগুন দিয়েছে, অথচ হেলপার ঘুমিয়ে ছিল। সেই ঘুমন্ত মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। এরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, জেলে পুরেছে, আমরা তারপরও জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা যে ওয়াদা দেই সে ওয়াদা রাখি। আমরা ওয়াদা দিয়েছিলাম দিন বদলের সনদ, সে অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
এছাড়াও বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিল আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না, আমরা ঠিকই ক্ষমতায় এসেছি। একটানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতা রয়েছি৷ তার আগে পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের উন্নয়ন হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এবং গ্রামের মানুষের উন্নয়ন হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন, এখন অবরোধ দিয়েছে। এর আগেও অবরোধ দিয়েছিল। অবরোধ দিয়ে খালেদা জিয়া তার অফিসে বসে থাকত। ৬০-৬৫ জন নিয়ে তারা অবরুদ্ধ হয়েছিল শেষপর্যন্ত। মানুষ কিন্তু সেই অবরোধ মানেনি।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরীসহ আরো অনেকে।
সেই সাথে অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন।