হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা গত ১০ দিনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের ১৩৬টি সামরিক যান সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করেছে বলে খবর দিয়েছেন হামাসের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আবু ওবায়দা । তিনি গতকাল (বুধবার) বিকেলে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। বিবৃতিটি হামাস নিয়ন্ত্রিত আল-আকসা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এদিকে কাতার জানিয়েছে, গাজায় এক বা দুদিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিতে ইসরাইল রাজি হতে পারে।বুধবার হামাস ঘোষণা করেছে, গাজায় ইসরাইলের স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে তারা ১৩৬ সামরিক যান ধ্বংস করেছে।
হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত আল-আকসা টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত একটি বক্তৃতায় মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেছেন, আমরা ইসরাইলি স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ১৩৬ ইসরাইলি সামরিক যান ধ্বংস করেছি। বিদেশি বন্দিদের মুক্তিতে করতে তারা বিমান হামলা জোরদার করে এবং গণহত্যা করছে। সম্ভাব্য বন্দিবিনিময় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের একমাত্র পদ্ধতি হলো বন্দিদের বিনিময়ের জন্য একটি ব্যাপক চুক্তি, তা সম্পূর্ণভাবে হোক বা আংশিকভাবে হোক বা দলগতভাবে হোক।
বুধবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানের সময় ৩৩ সেনা নিহত হয়েছে। একটি সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার যুদ্ধে আর্টিলারি কর্পসের একজন সেনা নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই সেনা।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উত্তর গাজা উপত্যকায় সংঘাতের সময় বিমানবাহিনীর অভিজাত শালদাগ ইউনিটের আরেক সৈনিকও নিহত হয়েছে। ইসরাইল বলেছে যে ২৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযানের সময় তাদের ২৬০ সেনা আহত হয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান চালাতে যাওয়া সেনারা বেশ ভালোই এগিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরাইলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জোনাথান কনরিকাস। তবে তিনি সঙ্গে এও স্বীকার করেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য হামাসও বেশ ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য এটি খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি যুদ্ধক্ষেত্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হামাস এই যুদ্ধের জন্য খুবই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে।’
৭ অক্টোবর তার অপারেশন আল-আকসা বন্যা চলাকালীন হামাস ইসরাইলি কারাগারে বন্দি প্রায় ৬ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে প্রায় ২৪২ ইসরাইলিকে বন্দি করেছে। প্রতিবাদে ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এদিকে নিজেদের হাতে আটক জিম্মিদের মধ্য থেকে ১০-১৫ জনকে মুক্তি দিতে পারে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। আর এই ১০-১৫ জনকে মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে গাজায় এক অথবা দুদিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে পারে ইসরাইল।
বুধবার (৮ নভেম্বর) কাতারের একটি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। নাম গোপন রাখার শর্তে সূত্রটি বলেছে, ১০-১৫ জিম্মিকে ছাড়িয়ে নিতে কাতারের মধ্যস্থতায় ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় আলোচনা চলছে। তাদের মুক্তি দেওয়ার বদলে দুই বা একদিনের যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
সূত্র: আলজাজিরা, আনাদোলু