জনসম্মুখে পবিত্র কোরআন পোড়ানো বা অবমাননা বন্ধ করতে আইন পাস করেছে ইউরোপীয় দেশ ডেনমার্ক। কুরআন অবমাননার ঘটনায় দেশটিতে তুমুল বিক্ষোভের মুখে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে দেশটির পার্লামেন্ট এ আইন পাস করতে বাধ্য হয়।
চলতি বছর ডেনমার্ক ও সুইডেনে বেশ কয়েকবার কোরআন অবমাননার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে অসংখ্যবার জনবিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছে দেশদুটি। বিশেষ করে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সমালোচনার মুখে পড়ে ডেনমার্ক। নর্ডিক সরকারগুলোর প্রতি ইসলামবিরোধীদের কোরআনের কপি পোড়ানো বা ক্ষতিগ্রস্ত করার এহেন চর্চা নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে।
হুমেলগার্ড আরও বলেন, এই ধরনের বিক্ষোভ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে ডেনমার্কের সম্পর্ক, জাতীয় স্বার্থ এবং শেষ পর্যন্ত ডেনিশ নিরাপত্তায় আঘাত হানতে পারে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই কোরআন অবমাননা বন্ধে আইন পাস করা হয়েছে।
নতুন আইনটি নিয়ে বৃহস্পতিবার ডেনমার্কের পার্লামেন্টে টানা পাঁচ ঘণ্টা তর্ক-বিতর্ক চলে। দীর্ঘ বিতর্কের পর তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটাভুটিতে আইনটির পক্ষে ভোট দেন ৯৪ জন আইনপ্রণেতা। আর বিপক্ষে পড়ে ৭৭ ভোট।
আইনটি পাস হওয়ার ফলে ডেনমার্কে এখন থেকে কোরআনের কোনো অবমাননার ঘটনা অপরাধ বলে গণ্য হবে। আর সেই অপরাধের দায়ে ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানার শিকার হতে হবে।
তবে কোরআন অবমাননাকে অপরাধ গণ্য করা হলেও ধর্মের সমালোচনা করে কোনো বক্তব্য দেওয়া অপরাধ বিবেচিত হবে না।এ বিষয়ে হুমেলগার্ড বলেন, এ আইনের মাধ্যমে ডেনমার্ক একদিকে ধর্মের সমালোচনা করার অধিকারসহ সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত বাক-স্বাধীনতা রক্ষা এবং অন্যদিকে কোরআন পোড়ানোর কারণে ইসলামপন্থীদের আক্রমণের শিকার হওয়ার শঙ্কায় জাতীয় নিরাপত্তার সুরক্ষায় ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।
এদিকে ডেনমার্ক সরকার যাই বলুক, নতুন এই আইন মেনে নিতে পারছে না সরকারের বিরোধীরা। সমালোচকরা বলছেন, এই আইন ডেনমার্কে বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করবে।
ডেনমার্কে অভিবাসনবিরোধী দল হিসেবে পরিচিত ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা ইঙ্গার স্টোজবার্গ বলেন, নতুন আইনের জন্য আমাদের ইতিহাসের কঠোর বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।
এদিকে সুইডেনও বিবেচনা করছে, কীভাবে মুসলিমবিরোধীদের হাতে কোরআন পোড়ানো রোধ করা যায়। তবে নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে অবমাননা ঘটতে পারে, এমন সমাবেশের আবেদনে পুলিশ অনুমোদন দেবে কিনা, সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে।
সূত্রঃ রয়টার্সর