আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখ এখন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে। ৭ জানুয়ারির এ নির্বাচন তারা গভীর পর্যবেক্ষণে রাখছে। তারা দেখতে চায়, বিএনপি ছাড়া এই নির্বাচন কেমন হয়।তারা অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে জোর দিলেও বিএনপি ও তাদের সমমনারা নির্বাচন বর্জনের অবস্থানে থেকে ৬ ও ৭ জানুয়ারি ৪৮ ঘন্টার হরতালও ডেকেছে।
এদিকে শুক্রবার সকালে বাংলাদেশে নির্বাচনি প্রচার শেষ হয়েছে। আর এক দিন পর বহুল আলোচিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা এই ‘একপাক্ষিক’ নির্বাচনও গভীর পর্যবেক্ষণে রাখছে, এর কারণ হলো, এই নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে যান কিনা, ভোট দিতে তাদের জোর করা হয় কিনা এবং সহিংসতা কোন মাত্রায় হয়- এসব তারা তা দেখতে চায়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বুধবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করে। আমরা নিবিড়ভাবে এ নির্বাচনের দিকে নজর রাখছি। তবে কোনো ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র কী ব্যবস্থা নিতে পারে বা পারে না, সে বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলা হয় না।”
জাতিসংঘও বাংলাদেশের নির্বাচন গভীর পর্যবেক্ষণে রাখার কথা বলেছে। বুধবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাকিদদের প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিব অন্তোনিও গুতেরেসের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো বলেন, “আমরা শুধু প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের আশা, স্বচ্ছ ও সংগঠিত উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন পর্যন্ত এতটুকুই আমাদের বলার আছে।”
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, “আমরা ধারবাহিকভাবে বলে আসছি যে, বাংলাদেশে নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আমরা এই অবস্থানেই আছি।”
এদিকে নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে নির্বাচনের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “কূটনীতিকরা জানতে চেয়েছেন ভোটারদের ভোট দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে কিনা। আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, এ ধরনের কোনো চাপ নেই। বরং আমরা ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য জনগণকে উৎসাহিত করছি।”
বৈঠক শেষে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, “নির্বাচনের জন্য ইসির প্রস্তুতি সম্পর্কে আমরা জেনেছি।” তবে তারা এই প্রস্ততিতে সন্তুষ্ট কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
একটি সফল নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হবে।” তার কথা, “চীন আশা করছে নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনের পর বাংলাদেশ হবে আরো শক্তিশালী, সহনশীল ও ঐক্যবদ্ধ।”