Sunday, December 29, 2024
spot_img
Homeরাজনীতিবিএনপির মহাসমাবেশে ফ্যাসিস্ট স্টাইলে পুলিশ ও আওয়ামী গুণ্ডাদের যৌথ হামলা

বিএনপির মহাসমাবেশে ফ্যাসিস্ট স্টাইলে পুলিশ ও আওয়ামী গুণ্ডাদের যৌথ হামলা

বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে ফ্যাসিস্ট কায়দায় হামলা চালিয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এ সময় রণসাজে সজ্জিত হয়ে পুলিশ লাখ-লাখ কর্মীর ওপর নির্বিচারে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে ও মূহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বিএনপির কর্মীদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের সাথে যোগ দেয় আওয়ামী লীগের হেলমেট বাহিনীর গুণ্ডারা। এতে আহত হয়েছেন বিএনপি’র শত শত নেতাকর্মী। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অনেকে।

পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া ও সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দের মধ্যে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে চলে যেতে বাধ্য হন কেন্দ্রীয় নেতারা। কাঁদানে গ্যাসের কারণে সমাবেশস্থলে কারও পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব ছিল না।

শনিবার বেলা তিনটার দিকে নয়াপল্টন এলাকায় এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাঠিয়াল পুলিশ ও দলটির সন্ত্রাসীরা।

পুলিশের ফ্যাসিস্ট কায়দায় আক্রমণের ফলে বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যে নয়াপল্টনের সমাবেশস্থল পুরো ফাঁকা হয়ে যায়। এলাকাটি চলে যায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।

এর আগে বেলা দুইটার দিকে মহাসমাবেশস্থলের মঞ্চ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কারও উসকানিতে পা দেবেন না, দয়া করে বসে যান। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নস্যাৎ করতে চায় তারা (সরকার)।’

মির্জা ফখরুল যখন এ আহ্বান জানাচ্ছিলেন, তখন কাকরাইলের দিক থেকে কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া আসছিল। তবে মহাসমাবেশের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। এ সময় মঞ্চ থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দু-একটা পটকায় ভয় পাবেন না। গুলি হলে হবে।’

এরপর বিএনপি নেত্রী সেলিমা রহমান বক্তব্য দেন। তাঁর বক্তব্যের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তাঁর বক্তব্যের শেষ দিকে এসে মাইক বন্ধ হয়ে যায়। তখন বেলা আড়াইটা। এর আগে বক্তব্যে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ জনসভায় গোলাগুলি করছে তারা।

আমীর খসরুর বক্তব্যের সময়ও বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছিল। কাকরাইলের দিক থেকে এই শব্দ যখন আসছিল, তখনো মহাসমাবেশস্থলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাসর ধোঁয়া বিএনপির মঞ্চের দিকে আসতে থাকে। বেলা পৌনে তিনটায় একটি ভ্যানে করে রক্তাক্ত এক ব্যক্তিকে বিএনপির মঞ্চের সামনে আনা হয়। তখন উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

জানা গেছে, রাজধানীর কাকরাইল জামে মসজিদ এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের পরই তা সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপির কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসার সময় তাদের ওপর হামলা চালায় হেলমেট পরা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। তারা লাঠিসোটা হাতে পেটাতে থাকে বিএনপির কর্মীদেরকে। ফলে দুই পক্ষে ছোটখাট মারামারির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপির কর্মীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও কাঁদানেগ্যাস ছুড়ে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরুর পর তা পুরো এলাকায় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে রাজধানীর কাকরাইলে বিচারপতির বাসভবনের সামনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়। এসময় হেলমেট পরা সন্ত্রাসীরা একটি বাস ও আটটি পিকআপ ভাঙচুর করেছেন।

আরামবাগে সংঘর্ষ:

পুলিশের ফ্যাসিস্ট কায়দায় হামলার পর বিএনপির বিক্ষুব্ধ কর্মীদের পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এর জবাবে টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ডগ্রেনেড ব্যবহার করে পুলিশ।

ঢাকার আরামবাগে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ডগ্রেনেড ব্যবহার করে পুলিশ।

নয়াপল্টনে সমাবেশস্থল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশ সরিয়ে দেওয়ার পর আরামবাগ এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়।

বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগে মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।

ঢাকায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করার কথা ছিল বিএনপির। তাদের সমাবেশস্থলের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।  

কাকরাইলে বিজিবি মোতায়েন:

রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় ওই এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

দুপুর ২টার দিকে নাইটিংগেল মোড়ে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

ওই এলাকায় অন্তত ৪০টিরও বেশি গ্রেনেডের শব্দ পাওয়া গেছে। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুড়লে বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ পল্টনের দিকে, কিছু মৎস্য ভবনের দিকে চলে যায়। পরে পুলিশ উল্টো দিক থেকেও টিয়ারশেল ছুড়তে ছুড়তে এগোয়।

সূত্রঃ আমার দেশ

RELATED ARTICLES

1 COMMENT

  1. Excellent article! I appreciate the thorough and thoughtful approach you took. For more details and related content, here’s a helpful link: LEARN MORE. Can’t wait to see the discussion unfold!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

Recent Comments